ইসলাম ডেস্ক: জুমার নামাজ প্রতিটি মুসলমানের জন্য অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের অন্যতম একটি ইবাদত। জুমার দিনে অনান্য ইবাদাতের জন্যেও রয়েছে অতিরিক্ত সওয়াবের হুকুম। তাই এই দিনটিকে সঠিকভাবে পালন করা জরুরি।
জুমার পূর্বের দুই খুতবা জুমার আবশ্যকীয় অংশ। মুসল্লিদের জন্য তা মনযোগ ও গুরুত্বের সঙ্গে শোনা ওয়াজিব। খুতবা চলাকালীন অন্য কোন কাজ করা, কথাবার্তা বলা, নামাজ পড়া জায়েজ নেই। এমনকি পাশে কেউ কথা বললে তাকে ‘চুপ কর’ বলতেও নিষেধাজ্ঞা এসেছে হাদিসে।
রাসুল (সা.) খুতবার সময় কথা বলতে নিষেধ করেছেন। আবু হুরায়রাহ্ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘জুমার দিন যখন তোমার পাশের মুসল্লিকে চুপ থাকো বলবে, অথচ ইমাম খুতবা দিচ্ছেন, তা হলে তুমি একটি অনর্থক কথা বললে। (বুখারি, হাদিস: ৯৩৪, মুসলিম, হাদিস: ৮৫১)
খুতবা শোনার এত এত ফজিলত ও না শোনার গুনাহের কথা বর্ণিত হলেও দুঃখজনক বিষয় হল আমাদের সমাজে খুতবাতে ব্যত্যয় ঘটে এমন কাজ আয়োজন করে করা হয় প্রতিনিয়ত। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য একটি হল কোন কোন মসজিদে খুতবা চলাকালীন দানবাক্স চালানো হয়। এটা ঠিক নয়। যেখানে খুতবার সময় নামাজ পড়া, অন্যকে চুপ করতে বলাও গুনাহের কাজ, যদিও অন্য সময় তা উত্তম। সেখানে দানবাক্স চালানো তো আরও বড় গুনাহের কাজ। সুতরাং তা পরিহার করা জরুরি।
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দরভাবে ওজু করে জুমার জন্যে মসজিদে এল। তারপর মনযোগের সঙ্গে খুতবা শুনল এবং নিরবতা পালন করল তার দশ দিনের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। আর যে নুড়ি স্পর্শ করল সে অনর্থক ও গুনাহের কাজ করল। (মুসলিম, ৮৫৭:২৭)
এ বিষয়ে বাংলাদেশের শীর্ষ আলেম মুফতি মানসুরুল হক বলেন, ‘খুতবা চলাকালীন দানবাক্স চালানো মারাত্মক ভুল। এতে গুনাহ তো হয়ই উপরন্তু জুমার ফজিলতও বাতিল হয়ে যায়।’
মসজিদের জন্য দান করা ও দান সংগ্রহ করা অনেক সওয়াবের কাজ। এসব কাজে মুসল্লিদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসা উচিৎ। আর এক্ষেত্রে উত্তম পন্থা হল সবাই নিজ উদ্যোগে দায়িত্বশীলদের কাছে অনুদান পৌঁছে দেওয়া। একান্ত প্রয়োজন হলে সুন্নত নামাজের আগে বা পরে অথবা একদম ফরজ নামাজ শেষ করে দানবাক্স চালাতে সমস্যা নেই।
আল্লাহতায়ালা আমাদেরকে মহিমান্বিত জুমার দিনের যথার্থতা বোঝার ও তার মাহাত্ম্য রক্ষা করার তাওফিক দান করুন। আমীন।